মৃতদেহের সামনে দাঁড়িয়ে বক্তৃতা দেয়াটা খুব সহজ।
আত্মহত্যার দায়ে তাকে ভৎসনা করে
জাগতিক তত্ব কপচিয়ে
চুলে পাক ধরানো সারা জীবনের জ্ঞান উগরিয়ে
মৃতের পরিবারকে প্রবচন দেয়াটা আরো বেশি সহজ।
আত্মহত্যা সমাধান না!
সংগ্রাম চালিয়ে নিতে হতো শোসকের বিরুদ্ধে!
অল্পমূল্যে শ্রম বিক্রি করে হলেও টিকে থাকতে হবে নিষ্ঠুর পৃথিবীতে!
সমাজ যে জীবন গড়ে দিয়েছে তা হরণ করার এখতিয়ার তোমার নেই!
একবার সিলিংয়ে ঝুলানো ফাঁসে গলাটা বাড়িয়ে দেখুন।
জীবন সংগ্রামের কোন স্তরে পৌছালে আত্মহনন সম্ভব হয়।
মধ্যবিত্ত পিতাকে জিজ্ঞেস করুন,
সন্তানের প্রত্যাশিত চোখ যখন হতাশায় হাহাকার করে ওঠে
তখন বুকের জমিনে কোন দামামা বাজে?
অভুক্ত ক্লান্ত মাকে একবার জিজ্ঞেস করুন,
শূন্য স্তনে হাতড়ে বেড়ানো শিশুর অস্থিরতা
মাকে কোন সংগ্রামে ছুঁড়ে ফেলে?
জড় পদার্থের মতো আপনাদের শীর্ণ কণ্ঠের প্রতিবাদে
আজো ভাত জোটেনি কোন পথশিশুর।
নির্জীব আপনাদের বাক্য বাণে একবারের জন্যও
চকিত হয়নি অপদার্থ রাষ্ট্রযন্ত্র।
তবু লাশের পাশে দাঁড়িয়ে
আপনাদের সংগ্রামের বাণীতে থাকবে না কোন আহাজারি।
তবু আপনারাই আরো হাজার বছর বিপ্লবের স্বপ্ন দেখাবেন
আর একে একে মরতে দেবেন কৃষক-শ্রমিক-মধ্যবিত্ত।
তবু আপনারাই আত্মহত্যা নিয়ে প্রবচন শোনাবেন,
আর ক্ষীণ কণ্ঠে অশ্রুত ভঙ্গিতে নগর প্রদক্ষিণে শোনাবেন “লাল সালাম”।
(২ জুন ২০২১, সাতমাথা/বগুড়া)