Friday, April 23, 2021
হত্যার অবসান
আসুন, প্রশ্ন করি
আবলতাবল দিন
Wednesday, April 21, 2021
ক্ষুধার্ত সংলাপ
বড় রাস্তার মোড়ে উদ্ভ্রান্ত এক যুবক আচমকা আমায় প্রশ্ন করলো,
“বলতে পারেন সবচেয়ে বড় ঈশ্বর কে?”
আমি হতভম্ব হয়ে কিছুক্ষণ তাকিয়ে আমতাআমতা করে বললাম,
“এই ধরুন ইসলাম ধর্ম বলে আল্লাহ,
ঈশায়ীরা আল্লাহকে মানলেও সাথে যীশু,
হিন্দুর বলেন মহেশ্বর.... ”
আমাকে থামিয়ে দিয়ে যুবক বললো
“আপনার কাছে সবচেয়ে বড় ঈশ্বরের নাম জানতে চেয়েছি”।
এরপর অনেকগুলো রাত আরাধনা করেছি,
একেরপর এক ধর্মগ্রন্থগুলোর পৃষ্ঠা শেষ করেছি,
সেজদা থেকে শুরু করে চার্চের মোমবাতি ঝড়িয়ে চলেছি
তবু বড় ঈশ্বরের নাম জানা হলো না।
উদ্ভ্রান্ত যুবকের এমন আজগুবি প্রশ্ন ভুলতে বসেছিলাম দিনকতক পরে।
পেছন থেকে অট্টহাসির মতো আওয়াজে কে যেন প্রশ্ন করলো,
“কি, খোঁজ পেলেন বড়ঈশ্বরের?”।
হকচকিয়ে দেখি যুবকটি একগাল হেসে তাকিয়ে আছে।
উচ্চস্বরে সে বললো, জানি পারবেন না
অথচ রোজ আরাধনা করেন সেই ঈশ্বরের,
তার খোঁজে পৃথিবীর প্রতিটি মানুষ নাকাল হয়ে যায়,
প্রতি রাতে তার নামের প্রার্থনা কুড়েঘর থেকে অট্টালিকা পর্যন্ত।
পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ঈশ্বরের নাম ভাত....
শেখ মাসুকুর রহমান শিহাব,
সাতমাথা/বগুড়া
Saturday, April 17, 2021
অনিমেষের চিঠি-৩
আজ তোমায় অসাধারণ দেখাচ্ছিল। বহু বছর পরে দেখছি বলে মনে হচ্ছিলো। তোমার কথা বলার ধরন বুঝতে দিচ্ছিলো না, আসলে কি চাও তুমি। সবতো শেষ করেছি, আর কি দেই। সবতো শেষই করলে। আকাশে মেঘ দেখে তোমার মনে পরলো একছড়া কদম ফুলের কথা, শেষ বর্ষায় তোমায় দিয়েছিলাম। আমিতো ভুলতেই বসে ছিলাম, তুমি আবার কেন জ্বালাচ্ছো!
কন্যা, আজ তুমি কদম খুজছো সৌখিনতায়। কিন্তু তুমি হয়তো ভুলে গেছো এই অলস সময়ের জন্যই পথ দুটো হয়ে গেছে।
নীল জিন্স আর টি শার্ট পরে কাক ভেজা মূহুর্ত আমিও ভুলিনি। কিন্তু কদম ছিঁড়তে ও পথে আমি আর পা বাড়াতে চাইনা। আজ যখন তুমি কদম ছিঁড়তে চাচ্ছো তখন কতো কমল পাপড়ি পায়ে পিষে যাচ্ছে তাকি তোমার খেয়ালে আছে! পথের পাশে গাছতলায় তোমার-আমার পায়ে পিষে যাচ্ছে কতো?
গতসন্ধ্যার বৃষ্টিতে বেরিয়েছিলাম, একগাছা কদম হাতে নিতে খুব ইচ্ছে হচ্ছিলো। তোমায় ভাবছিলাম কিছুক্ষণের জন্য। হাতে বকুলের চুড়ি, বেলীর দুল, মাধবীলতার খোঁপা, সবুজ ঘাসের পায়েল আর করবী ঝুলানো নীলকাঞ্চনের মালা। পরনে ছিল সাদা শাড়ি, বর্ষা আরেক ফুল যেন হয়ে উঠছিলে। আমি কি তোমার চিন্তায় ডুবে যাচ্ছি! না বরং আসল কথাই বলি।
কন্যা, পাহাড়ের মাথায় মেঘে ধোয়া কদম দেখেছো! তোমার কল্পনার চেয়ে সুন্দর। পাহাড়ে ক্যান্টনমেন্ট দেখেছো? কদম গুলো চাপা পরছে ওর শক্ত বুট জুতার নিচে। আমার ভালোবাসার পাপড়ি যে ভাবে তুমি মুচড়েছো, ওরা সেভাবে পাহাড় মোচড়ায়, পাহাড়ের শান্তি মোচড়ায়, নীলকাঞ্চন মোচড়ায়, মেয়ে মোচড়ায় আর কদম মোচড়ায়। ওরা শুধু পাহাড়ে না, সমতলের গাছ কাটছে, পায়রাদের বুকে গুলি করছে, বকুল তলায় উঁই দিচ্ছে আর মাধবীলতা উপড়ে দিচ্ছে।
তুমি যে কদম ফুলের বায়না ধরেছো, তা তোমার হাতে থাকবেতো! আমি যে তোমার হাতের, হাতের ফুলের, ফুলের পাপড়ির, পাপড়ির রেনুর জন্য যুদ্ধে নেমেছি তা তুমি বুঝলে না কন্যা। আমার সাধের সন্ধ্যামালতি তুলে ফেললে, বললে তোমাকে নাকি মশায় পেয়েছে।
কন্যা, আমি এখনো তোমার হাতে বকুলের চুড়ি, বেলীর দুল, মাধবীলতার খোঁপা, সবুজ ঘাসের পায়েল আর করবী ঝুলানো নীলকাঞ্চনের মালার জন্য লড়াই করছি। তুমি আমার বাকি সন্ধ্যামালতি সহ নয়নতারা গুলো তুলে ফেলো। আমি না হয় আরেকটা কদমের চারা পুতে দেবো।
ইতি,
অনিমেষ