আমি যদি অসময়ে মারা যাই অথবা আত্মহত্যা করি
তবে হে চিন্তাশীল মানুষগণ, কাকে দায় দেবেন?
কাকে জিজ্ঞেস করবেন আমার মৃত্যুর সঠিক কারণ জানতে?
কাকে প্রশ্ন করবেন, আপাত বোকা এই ছেলেটা কেন আত্মহত্যা করলো?
আপনারা কি আমার পরিবারকে দায় দেবেন?
যাদের সাথে আমার অবসর বা রাত যাপিত হয়েছে,
শুধু মাত্র দু'বেলা খাবার একসাথে খাই বলেই কি,
তারা আমার মৃত্যুর কারণ জানতে পারবে!
অথচ তারা চূড়ান্ত ভাবে অক্ষম আমার মস্তিষ্কের আলোড়ন জানতে,
সংসারের ঘানি টানতে গিয়ে মধ্যবিত্ত বা তার নিচের মানুষগুলো
মানুষ থেকে কবেই ভারবাহী প্রাণীতে রুপান্তর হয়েছে তা তারা নিজেরাই জানে না।
তবে নিশ্চয়ই আমার পরিবার এটা জানে না,
কেন আমি মারা যাচ্ছি...
আপনারা কি আমার নিকটাত্মীয় বা বন্ধুদের জিজ্ঞেস করবেন?
অথচ প্রচণ্ড ক্ষুধার সময় তারা কেউ জানতই না আমার অক্ষমতা।
শেষ সন্ধ্যেবেলা আধখাওয়া সিগারেট টানতে গিয়ে পেটে যে প্রচণ্ড মোচড় উঠেছিল,
তা কোন বিলাশী খাবারের অম্বল নয় বরং ক্ষুধা।
সেই বন্ধুদের জিজ্ঞাসা করা কতটা ফলপ্রসূ হবে
যারা এটা জানে না যে, শীতে আমি কতমাত্রায় কম্পন অনুভব করবো।
তাহলে তারাও কি আমার মৃত্যুর দায় মুক্ত নয়...?
আপনারা কি অথর্ব ও আত্মবিস্মৃত রাষ্ট্রযন্ত্র এবং তার পরিচালকদের প্রশ্ন করবে?
সংবিধান অনুযায়ী যাদের দায়িত্ব ছিল আমার প্রতি,
আমার ক্ষুধা পেটে মোচড় কাটার আগে বা
শীতের কম্পন আমি মাপতে যাবার আগে এর ব্যবস্থা করা।
বিনা চিকিৎসায় মরবার আগে
শিক্ষা ব্যায় বহন করতে না পেরে ফাঁস নেবার আগে
বেকার হয়ে হতাশায় ডুবে মরবার আগে
সংবিধান (যা কিনা জীবনের বিনিময়ে প্রতিষ্ঠিত), হ্যাঁ সংবিধান এই পরিচালকদের দেখ ভাল করার দায়িত্ব দিয়েছিল, তাদের প্রশ্ন করবেন?
আসুন না,
প্রায় মরে যাওয়া এই নির্বোধটার মৃত্যু নিয়ে
আপনাকে জিজ্ঞাসা করি।
নাগরিক হিসেবে অন্য নাগরিকের মৃত্যু দায় নিয়ে আপনাকেই না হয় প্রথম প্রশ্ন করি...
(২৭ জুন ২০২০, বগুড়া)
No comments:
Post a Comment