Thursday, November 24, 2022

শান্তিচুক্তি (অণুগল্প-১)

❝খিদা লাগে বাজান। এক গেলাস পানি দিয়া নাস্তা করছি, দুপরে রুটি খাইছি। খিদা লাগছে...❞
১০ নম্বরে গোল চত্তরে কাছেই বাধানো বটের নিচে এক হাতে লাল চায়ে কাপ আর আরেক হাতে সিগারেট জ্বালিয়ে জড় ও জীবের চলাচল দেখছিলাম। ক্ষীণ আর্তস্বর কানে পরতেই চোখে পড়লো, একজোড়া হতাশায় ডোবা অথচ জ্বলজ্বলে চোখ...
শুকনো রুটি আর কনডেন্স মিল্কের চায়ে কত সুখ লুকোনো থাকতে পারে! “সিগারেট নিবেন?” ৫টাকার একটা সাদা শলাকা বিশ্বের সবচেয়ে শান্তিচুক্তি সম্পন্ন করলো বাধানো বটের তলায়। অথচ পুরো পৃথিবী জানতেও পারে না কতো সহজে যুদ্ধ বিরতির স্মারক প্রকাশিত হয়। 
সঙ্গবদ্ধ ক্ষুধাগুলো পায়রা উড়িয়ে আহ্বান করুক, দ্বিতীয়-তৃতীয়র বেড়া ভেঙে এক বিশ্বের ইশতেহার ঘোষণা করুক

শান্তিচুক্তি 
১৭অক্টোবর ২০২২
মিরপুর-১০, ঢাকা


Thursday, July 21, 2022

কিছু বলার ছিল....


"কিছু যদি নাই বলো তো চলে যাচ্ছি"
বিশ্বাস করো, ধমক দিয়ে বললেও ভালোবাসা খুঁজে পেয়েছিলাম।
তোমার থিরথির কাঁপতে থাকা ঠোঁট কেমন টানছিল আমায়,
বোকার মতো তোমার চোখের দিকে তাকিয়ে ফিরিয়ে নিচ্ছিলাম,
ডুবে যাবার ভয়ে।
ভালোবাসার সাগরের গভীরতা আমার জানা নেই যে......

তোমার হাতটা যখন ছুঁয়ে গেলো,
আমি চমকে গেলাম।
মানবীর রূপে একোন স্বর্গীয় সুখ তুমি ধরা দিলে!
আমি কি এতোটাই অবোধ,
তোমায় কাছে পেয়েও কেন বাঁধলাম না নীল সূতোয়....!

চোখের আড়ল হবার আগে একবার পেছন ফিরে তাকাবে ভেবেছিলাম,
দৃষ্টির আড়াল হবার আগে চিৎকার করতে চেয়েও থেমেছি নিজের স্বপ্নের খোঁজে,
শেষে অবাধ্য আমি আছড়ে না পরি ধুলোর পথে,
শুকিয়ে যাও পাতা হয়ে.......

Wednesday, July 20, 2022

বৃষ্টি এসেছিল

 বৃষ্টি এসেছিল


আকাশে প্রচণ্ড মেঘ দেখে ছুটে গেছি রাস্তায়,
ঝড়ো বাতাসে নিজেকে ভাসিয়েছি তোমার খেয়ালে,
হাটতে গিয়ে হঠাৎ তোমার পায়ের আওয়াজ,
পলক ফিরেই তুমি নেই।

বৃষ্টি ভেজা ধোঁয়া ছড়ানো লাল চায়ে চুমুক দিয়ে মনে পড়ছে তোমার নিশ্বাস,
মনে হলো কানের কাছে এসে বললে,
"তোমার চিনি ছাড়া চা কি বৃষ্টি জলে মিষ্টি হয়? "

শহরের বিচ্ছিন্ন কৃষ্ণচূড়াটা আজকের বৃষ্টিতে সেজেছে অগ্নি সাজে,
তার রূপের দর্পে ব্যস্ত শহর যেন নাচছে নূপুর ছন্দে।
এই বৃষ্টি জল শুধু আমার চিনি ছাড়া লাল চায়ে না,
বরং মিষ্টি করে তুলেছে আমার শহরকে.....


বগুড়া


ছেলেবেলা, অবেলা

জন্ম নেবার পরে আমাকে কি নামে সম্বোধন করা হবে
তা নির্ধারণ করার আগে নির্ধারিত হয়েছিল আমার ধর্ম কি।
আমার সদ্য জেগে ওঠা কানে বারবার উচ্চারণ করে জানানো হয়েছে
আমি ❝মুসলমান❞।

আমার প্রকৃতি, আমার ছেলে বেলা
অথবা মনে পরবে না এমন স্মৃতিগুলো সমবেত হবার আগে
রাষ্ট্রীয় খাতা মোহর মারা হলো আমার বর্ণ ❝সুন্নীহ❞।

যখন আমার পাখিদের গানে, চাঁদের আলো ছুঁয়ে
মৃদু লোককথায় একটু একটু করে ঘুমিয়ে পরার কথা,
তখন, মহান ঈশ্বরের বন্দনাতে ক্লান্ত হওয়া চোখকে বিশ্বাস করেছে ঘুম বলে।

স্কুলে, কলেজে, হাটে, বাজারে, আড্ডায়, খেলার ছলে
আমাকে বারবার শেখানো হয়েছে
আমি মুসলিম, তুমি অন্য কোন ধর্মের
তবে তা আমার না, তা নিতান্তই নগন্য।

জন্মাবার এতটা বছরে যখন মানুষ হবার জন্য আর্তনাদ করি
তখন ব্যর্থ ছেলেবেলাগুলোকে ছুড়ে ফেলতে হয়
আর অতীতহীন এক অস্তিত্বের কান্না চেপে ধরে।

আমি মুসলিম
আমি হিন্দু
আমি খ্রিস্টান
আমি বৌদ্ধ
আমি শিখ, জৈন, ঈশায়ী
কিন্তু আমি মানুষ না।

আমার ছেলেবেলায় কোরান আছে
আমার বেদ আছে
আমার বাইবেল আছে
আমার সকল মহান গ্রন্থ আছে
কিন্তু শোষণ মুক্তির মন্ত্র পড়ার, মানুষ বলে উচ্চারণে পাঠ নেই।

জ্বলতে থাকা পৃথিবীকে আরো কয়লা করে তোলা ধার্মিকের মিছিল থাকলেও
শান্ত করার ক'জন মানুষ নেই

শান্ত ছেলেবেলা গুলো আজন্মকাল মানুষ করে গড়ে তোলার লড়াই হোক
লড়াইয়ে ফুল ফুটুক
বারুদের জৈব স্তুপে চাষাবাদ হোক বর্ণের বিপরীত সাম্যের


ছেলেবেলা, অবেলা
১৯ জুলাই ২০২২, প্রথম প্রহর
ঢাকা


Tuesday, June 28, 2022

মর্গের স্বীকারোক্তি

নিরবতাকে ভালোবাসতে গিয়ে কবে যেন বোবা হয়ে গেছি।
অথচ, একদিন স্লোগানের তীব্রতায় শহর জুড়ে মিথ্যে কথার হোর্ডিংগুলো কেঁপে উঠতো।
আচমকা মিছিলে নীল ব্যারিকেড ইতস্তত করতো,
হাজার পেটের আগুন চিৎকার তুলে ছুঁটে যেতো
রাজপথের নিরব দেয়ালে।

অনভ্যস্ত পায়ে মিছিলের শক্তি হরিয়েছি
নিজের খেয়ালি মেদের ভারে।
যে শহরে প্রতিটি গলি পুড়ে ওঠা চামড়ার গন্ধে চেনা আমাকে মনে রেখেছিল,
সে শহরের বাঁকে দাঁড়িয়ে পরলে
অচেনা স্পর্শে বিব্রত হবার তর্জন শোনায়।

ভালোবাসালে দাবি রাখতে নেই
চাইতে নেই অধিকার
বলতে নেই অপ্রাপ্তির উপাখ্যান
এমনসব মিথের আড়ালে সে কবেই ধুলো জমে গেছে মায়াকান্নার।
ব্যর্থ প্রেমিকের রাত জাগা প্রলাপে ফুরিয়ে গেছে
হৃদয়ের উষ্ণতা।

খবরের কাগজে ধর্ষিতা বোনের চিৎকার,
আমি কাঁদি।
রেডিওর ওপারে রক্তের দাম না পাওয়া কৃষকের আহাজারি,
আমি কাঁদি।
টেলিভিশনে সাদা ব্যাগে মোড়ানো ছাই হয়ে যাও শ্রমিক,
আমি কাঁদি।
স্যোসাল মিডিয়ায় সত্য প্রকাশে গলা কাটা সাংবাদিক,
আমি কাঁদি।
ঝুলতে থাকা দুধের কৌটা কিনতে না পারা অসহায় পিতা,
আমি কাঁদি।
হতাশায় শেষ চিঠিতে ক্ষমা চাওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষর্থীর লাশ দেখেও
আমি শুধু কাঁদি।
আমার স্লোগান, মিছিল, স্বপ্নের বেড়ে ওঠা আমায় ভর্ৎসনা করে, খিস্তি দেয়
আর রাত জেগে আমি শুধু কাঁদি।

মৃত্যু মিছিল পেড়িয়ে হেরে যাওয়া সৈনিক আমি
লা মাকানের অসীমতায় আটকে যাওয়া দীর্ঘশ্বাস নিয়ে
আমার শহর, গ্রাম, দেশটাকে পুড়তে দেখি।

***
মর্গের স্বীকারোক্তি
০৮/০৬/২০২২
বোদা, পঞ্চগড়





Wednesday, June 8, 2022

উপলক্ষ : বসন্ত



সম্পর্কগুলো কালো চাদরে ঢাকা পরছে নীল জোছনায়,
অন্ধকার ঘরের কোণে আমার হৃদয়,
সন্ধ্যা ঘরে একটা সিগারেট আনমনে জ্বলাই নির্লিপ্ত ঠোটে।

পলাশ ফুল খুঁজতে যাবার আর প্রয়োজন হয় না,
চাঁদটা আজ কতটুকু আলো দিচ্ছে খোঁজ নিতে হয় না,
তাকিয়ে থাকতে হয় না রাস্তার ভিড়ে হুড তোলা রিক্সার জন্য।

শার্টের বোতামটা খুলে গেলে কেও আর লাল চোখে তাকায় না,
পাঁচ টাকার গোলাপ ষাট টাকায় কিনতে আর কেও বায়না করে না,
মাঝ রাতে ঘুম ভাঙিয়ে আর কেও তিন শব্দের ম্যাজিকেল ওয়ার্ডটা বলে না।

সান্ধ্য ঘরে সিগারেট জ্বালিয়ে ভাবি,
বসন্ত বুঝি আমার না.....

১৩/০২/২০১৯, বগুড়া

জলছাপ

                               

যদি খুব অভিমানে তোমার চোখে না তাকাই,
তুমি কি কষ্ট পাবে?
কষ্টে তোমার চোখ জোড়া কি নীল হয়ে আসবে?

ঝুম বৃষ্টি চলছে ছাদে,
তোমার হাত ধরে না দাঁড়িয়ে যদি আনমনে থাকি,
তবে কি তোমার চোখেও শ্রাবণের মেঘ দানা বাঁধবে?

ধরো, আমার অপেক্ষায় এক গাছা করবী খোঁপায় নিয়ে বসে আছো,
ক্লান্ত আমি খুব ঘেমে তোমায় না ছুয়ে বাসি পত্রকা নিয়ে বসে পড়লাম,
তখন্তোমার কি মনে হবে, "ভালোবাসি না?"

যদি কোন দিন ডায়েরিটা খুলে দেখো তাতে একটাও নতুন কবিতা নেই তোমায় নিয়ে,
খুব অভিমানে মুখটা কালো করে আঁচলে লুকাবে?
চোখের জলে পাতের খাবারে নুন বাড়াবে?

নাকি, মনভুলো আমায় দিনের শেষে মনে করিয়ে দেবে
তোমার সারা দিনের বস্ততার ভিরেও ছিলাম আমি?
দীর্ঘ বিকেলের একাকীত্বের সঙ্গী ছিল আমার ফেলে যাওয়া ছায়া,
নাকি গভীর রাতে আমার ঘুমিয়ে যাওয়া চোখে তাকিয়ে মুখ টিপে বলবে "ভালোবাসি"?


১৮/১২/২০১৯, বগুড়া


ভালো আছি, ভালো থেকো



এখন আমি ভালো থাকি, কেন জানোতো…?
তুমি চাও আমি ভালো থাকি।
নিজের জন্য ভালো থাকতে সেই কবেইতো ভুলে গেছি…

তোমার শেষ চাওয়া ছিল আমার ভালো থাকা,
সব চাওয়া পুরন করে এটা কেন ফেলে রাখি!!

তুমি চাইতে রাত জেগে তোমায় নিয়ে ভাবতে,
আজো তাই করে চলেছি।
তুমি চাইতে খাবার সামনে নিয়ে তোমায় ভেবে এক চুমুক জল গিলতে,
আজো তাই করি।
তুমি বলতে দুধ চায়ে একটুকরো আদা মিশিয়ে নিতে,
বিশ্বাস করো আজো তাই করি।
আরো কতো কিছু চাইতে তুমি….

চাইতে ভালোবেসে বরষার কদম ফুল,
চাইতে মাঝ রাতের শিশির ভেজা মিষ্টি বকুল,
রেল লাইনের খালি পায়ে হাটতে,
বলতে তারাদের সাথে কথা বললে নাকি তুমি শুনতে পাও!
আজো বলি, সত্যি কি শুনতে পাও….?

আমি সত্যি এখন ভালো থাকি,
তুমি চেয়েছিলে যে, তাই

তুমি চেয়েছিলে,
মাধবীলতা বলে আর কাওকে না ডাকি
ডাকি নি।
রিক্সায় আমার ডান পাশে কেও যেন না বসে,
এখন আমিই ডান পাশে বসি।
আমার কবিতায় তুমি ছাড়া কেও যেন না থাকে,
দেখো, এখনো তুমি।

সত্যি আমি এখন অনেক ভালো থাকি,
কারন, তুমি শেষ বার চাইলে তাই।

কিন্তু আমি,
আমার শেষ চাওয়া!
নাহ, তুমি আর ফিরলে না….
তবু আমি ভালো আছি,
কারণ আর কিছু না, শুধু তুমি চেয়েছিলে তাই…

১৫.০৭.২০১৮, বগুড়া

সত্যি কি ভালোবাসতাম!



আমরা কি সত্যি এতটা ভালোবাসতাম!
এতোগুলো রাত ভিন্ন পুরুষের বুকে হাত রেখে
যে স্বপ্ন তুমি আঁকছো তা কি আমার নয়!
এতোগুলো দিন ভিন্ন সংসারে তোমার যে অবদান
তা কি আমার সংসারে প্রাপ্য নয়!!

আমরা কি সত্যি এতটা ভালোবাসতাম!
ক্যাম্পাসের প্রতিটি দেয়াল একা আমাকে করুণা দেখায়
যে দেয়ালগুলো একসাথে একই মূহুর্তে স্পর্শে ছিল দুজনের।
শহরে পার্কগুলোয় ভিন্ন পুরুষের সাথে তোমার বিচরণ আমাকে শোনায় সান্ধ্য কাক
যেখানে বসে সস্তা কাগজে সাংসারিক আঁকিবুঁকি ছিল আমাদের।

আমরা কি সত্যি এতটা ভালোবাসতাম!
আমিত্ব ভরা জীবনের সব জঞ্জাল ঝেড়ে
তোমার বসতিতে নির্মাণ এখন সাফেদ বিরান ভূমি।
অযত্নে অযত্নে কত শেকড় বাকড় পেচিয়ে শ্বাস রোধ,
তবু প্রত্নতাত্ত্বিক আত্মাহুতির স্বাক্ষী দুটি শব্দে, আমি।

আমরা কি সত্যি এতটা ভালোবাসতাম!
ফেলে যাওয়ার শর্তে ছিল না হঠাৎ দেখায় তাচ্ছিল্য,
ফেলে যাবার কি শর্ত ছিল?
বরং আমৃত্যু শর্ত ছিল।
শর্ত ছিল, হঠাৎ সূর্যাস্তের সময় একটা গাঢ় নিশ্বাস
ভুলিয়ে দেবে দ্বিতীয় অস্তিত্ব।

আমরা কি সত্যি এতটা ভালোবাসতাম!
দ্বিতীয় পুরুষের তীব্র উপস্থিতির উৎসবে
আমিই বিব্রত নাম।
আর দ্বিতীয় নারীর অস্তিত্বের সন্ধানে
অতৃপ্ত আমার অভিযান।

আমরা কি সত্যি এতটা ভালোবাসতে পেরেছিলাম...!



৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০, Bogura.



অ-তে অভিজিৎ


এদেশে অভিজিতে জায়গা হয় না,

স্মরণীয় তালিকা থেকে ঝরে পরে,
প্রতিজন অভিজিৎ শঙ্কা নিয়ে বাঁচে
শুধু মানুষ কাঁদবে বলে।

বাইবেলের প্রতি তীব্র সন্দেহ থেকে মস্তিষ্কের জন্ম
পুরানের সাথে বিরোধ করে সভ্যতার উন্মোচন
কোরআন নামক মহাগ্রন্থের প্রতি অনুশাসনে অসঙ্গতির ঝর্ণায় বাধ দিয়ে প্রগতির লড়াই,
প্রতিটির সংমিশ্রণের অভিজিৎ এদেশে রক্তাক্ত লুটিয়ে পরে
আর উৎসবে চলে বিজ্ঞাপন।

অভিজিৎ নিষিদ্ধ হয়
অভিজিৎ হত্যা হয়
অভিজিৎ দু'দিনের বিজ্ঞাপন হয়
অভিজিৎ উবে যায়
অভিজিৎ গ্লানি ভরে উচ্চারিত হয়
অভিজিৎ মিছিলে শ্লোগান হয়
অভিজিৎ লাল পতাকায় সামিল হয়
অভিজিৎ নিরব মোমবাতি হয়
অভিজিৎ কিছু মানুষের আড্ডা থেকে হাজার যুবকের হৃদয় হয়
অভিজিৎ সব ছাপিয়ে ভাবিয়ে তোলার চেতনা হয়।

বইয়ের পাতাগুলো উল্টিয়ে অভিজিতের মগজ পড়া যায়,
পড়া যায় বিজ্ঞানের সুপ্ত তবে দৃঢ় ব্যবহারে নিশ্বাসের উচ্চারণ,
অঘোষিত অথচ নিষিদ্ধ অভিজিতের প্রতিটি বর্ণ জ্বলে উঠুক হাতুড়ি হয়ে,
শোক নয় চেতনা হয়ে ছড়িয়ে পড়ুক একাডেমির রক্ত মাখা মাঠ ছেড়ে
ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইল বা তার বেশি প্রতি বিন্দু মগজে।

26.2.2021 (Bogura)এদেশে অভিজিতে জায়গা হয় না,

স্মরণীয় তালিকা থেকে ঝরে পরে,
প্রতিজন অভিজিৎ শঙ্কা নিয়ে বাঁচে
শুধু মানুষ কাঁদবে বলে।

বাইবেলের প্রতি তীব্র সন্দেহ থেকে মস্তিষ্কের জন্ম
পুরানের সাথে বিরোধ করে সভ্যতার উন্মোচন
কোরআন নামক মহাগ্রন্থের প্রতি অনুশাসনে অসঙ্গতির ঝর্ণায় বাধ দিয়ে প্রগতির লড়াই,
প্রতিটির সংমিশ্রণের অভিজিৎ এদেশে রক্তাক্ত লুটিয়ে পরে
আর উৎসবে চলে বিজ্ঞাপন।

অভিজিৎ নিষিদ্ধ হয়
অভিজিৎ হত্যা হয়
অভিজিৎ দু'দিনের বিজ্ঞাপন হয়
অভিজিৎ উবে যায়
অভিজিৎ গ্লানি ভরে উচ্চারিত হয়
অভিজিৎ মিছিলে শ্লোগান হয়
অভিজিৎ লাল পতাকায় সামিল হয়
অভিজিৎ নিরব মোমবাতি হয়
অভিজিৎ কিছু মানুষের আড্ডা থেকে হাজার যুবকের হৃদয় হয়
অভিজিৎ সব ছাপিয়ে ভাবিয়ে তোলার চেতনা হয়।

বইয়ের পাতাগুলো উল্টিয়ে অভিজিতের মগজ পড়া যায়,
পড়া যায় বিজ্ঞানের সুপ্ত তবে দৃঢ় ব্যবহারে নিশ্বাসের উচ্চারণ,
অঘোষিত অথচ নিষিদ্ধ অভিজিতের প্রতিটি বর্ণ জ্বলে উঠুক হাতুড়ি হয়ে,
শোক নয় চেতনা হয়ে ছড়িয়ে পড়ুক একাডেমির রক্ত মাখা মাঠ ছেড়ে
ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইল বা তার বেশি প্রতি বিন্দু মগজে।

26.2.2021 (Bogura)
(Note: Photo Collected)